অনলাইন ডেস্কঃ যমুনা নদীর ওপর নির্মিত রেলসেতুর নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন এটি ‘যমুনা রেলসেতু’ হিসেবে পরিচিত হবে। পূর্বে এ সেতুর নাম ছিল ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেলসেতু’। পাশাপাশি ওই সেতুর দুই পাশের দুটি স্টেশনের নামও পরিবর্তন করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব স্টেশনের নাম এখন থেকে ইব্রাহিমাবাদ এবং বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম স্টেশনের নাম দেওয়া হয়েছে সয়দাবাদ।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে রেল সেতুর প্রধান প্রকৌশলী তানভীরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, প্রায় মাসখানেক আগে নাম পরিবর্তনের একটি চিঠি আমাদের কাছে এসেছে। আমাদের কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত ঠিকাদার, পরামর্শক প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমরা বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছি।
এছাড়া দুই রেল স্টেশনের নাম পরিবর্তন করে যমুনা সেতুর পূর্ব প্রান্তের নাম ইব্রাহীমাবাদ ও পশ্চিম প্রান্তের নাম সয়দাবাদ করেছে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর। রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, যমুনা নদীতে নির্মিত রেলসেতুর নাম বঙ্গবন্ধু রেল সেতু থাকছে না। এটি এখন ‘যমুনা রেল সেতু’ নামেই উদ্বোধন করা হবে এবং ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে এ সেতু উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে। সেই অনুযায়ী কাজ চলমান রয়েছে। এর আগে ২০ ডিসেম্বর রেল স্টেশন পরিদর্শনে আসেন রেল সচিব ফাহিমুল ইসলাম।
পরিদর্শনকালে তিনি জানিয়েছিলেন, স্ব-স্ব এলাকার জায়গার নামেই বিভিন্ন স্থাপনার নাম দিতে আগ্রহী তারা। যমুনা নদীর ওপর নবনির্মিত রেলওয়ে সেতুটির ক্ষেত্রেও তা–ই হতে পারে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর নাম পরিবর্তনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে গত ২৮ নভেম্বর বাংলাদেশ রেলওয়েকে একটি চিঠি পাঠায় রেলপথ মন্ত্রণালয়। ওই চিঠিতে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর নাম পরিবর্তন করে যমুনা রেল সেতু করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
একই চিঠিতে সেতুর পশ্চিম ও পূর্ব পাড়ের দুটি স্টেশনের নাম ‘বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব’ ও ‘বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম’ পরিবর্তন করে পশ্চিম অংশের নাম সয়দাবাদ এবং পূর্ব অংশের নাম ইব্রাহিমাবাদ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। ১৯৯৮ সালে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় কমিয়ে দেওয়া হয় ট্রেনের গতি। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হচ্ছে।
বিগত সরকার ২০২০ সালের ৩ মার্চ যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে আলাদা রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। প্রথমে প্রকল্পটির নির্মাণ ব্যয় ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা নির্ধারিত হলেও পরবর্তীতে তা ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ অর্থায়ন এসেছে দেশীয় উৎস থেকে এবং ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।